বিনোদন :- প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে। কিন্তু তার মধ্যেও তৈরি হচ্ছে বিতর্ক। কখনও প্রতিবাদীদের হাসি নিয়ে, কখনও প্রতিবাদের ধরন নিয়ে। এ বার সেই বিতর্কের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন উষসী চক্রবর্তী।
৪ সেপ্টেম্বর রাতে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় যখন গমগম করছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানে, তখনই আর এক নারীকে হেনস্থা করলেন আন্দোলনকারীদের একাংশ, এমনই অভিযোগ। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ওই রাতে প্রতিবাদী জমায়েতে শামিল হতেই গিয়েছিলেন শ্যামবাজারে। কিন্তু, তাঁকে দেখে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান উঠল। অভিযোগ, তাঁর দিকে ছোড়া হয়েছে জলের বোতল, জুতো। অভিনেত্রীর উপর এমন আক্রমণের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন অনেকেই। ঘটনার সমালোচনা করেছেন উষসীও। পাশাপাশি, আগের রাতে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর হাসির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি।
অগস্ট মাস থেকেই প্রতিবাদী আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে যোগ দিয়েছেন উষসী। ১৪ অগস্টের রাত দখল কর্মসূচি হোক বা ১৮ অগস্টের ‘ইস্টমোহনে’র প্রতিবাদ, ১ সেপ্টেম্বরের নাগরিক মিছিল থেকে ৪ সেপ্টেম্বরের রাত দখল— অভিনেত্রীকে দেখা গিয়েছে সবেতেই। ঋতুপর্ণা উপর হওয়া হামলার সমালোচনা করে সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘‘ঋতুপর্ণার সঙ্গে কাল যে ব্যবহার করা হয়েছে, তা সমর্থন করতে পারছি না। যে আন্দোলনের কেন্দ্রে নারী সুরক্ষা ও সম্মানের বিষয়টি রয়েছে, সেই আন্দোলনেই একজন মহিলার প্রতি এমন আচরণ একেবারেই অনভিপ্রেত।’’
গত ১ সেপ্টেম্বরের ধর্মতলার প্রতিবাদ সভায় স্বস্তিকার হাসিমুখে নিজস্বী তোলা নিয়েও শুরু হয় কটাক্ষ। শুধু তাই নয়, ১৮ অগস্ট ডার্বির ম্যাচ বাতিল হওয়ার পর আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মোহনবাগ ও ইস্টবেঙ্গলের প্রতিবাদ মিছিলে উষসীর হাসি নিয়েও সমালোচনা করা হয়। তার বিরুদ্ধে উষসী এ দিন বলেন, ‘‘প্রসঙ্গান্তরে বলে রাখি স্বস্তিকার হাসি নিয়ে ট্রোল করার ব্যাপারটা খুবই নির্বুদ্ধিতায় পরিচায়ক। এতে তাঁদের মনোভাবের দীনতাই প্রকাশ পায়। স্বস্তিকার কিছু এসে যায় না। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই গণ আন্দোলনের মূল শক্তিই হল মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা। এখানে মানুষ হাসবেন, কাঁদবেন, স্লোগান দেবেন, গান গাইবেন, চুপ করে বসে থাকবেন, ইচ্ছে হলে স্লোগানের সাথে নাচবেন, তাতে কার কী?’’
শুধু তাই নয় উষসী নিজের হাসির কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘ডার্বি ম্যাচের দিন হেসেছিলাম বলে আমাকেও কিছু মানুষ কটাক্ষ করেছিলেন। তখন কিছু বলিনি, ইচ্ছে হয়নি। এখন এই প্রসঙ্গে বলেই রাখি, হেসেছি, বেশ করেছি। নিরস্ত্র সমর্থকদের আটকাতে ১৪৪ জারি করে মানুষের জমায়েত আটকাতে চেয়েছিল প্রশাসন। সেটা ভেঙে জমায়েতে পৌঁছতে পেরে হেসেছি। পুলিশের সকল প্রচেষ্টাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মানুষের সম্মিলিত জমায়েত দেখে হেসেছি। যথেষ্ট পুলিশ না থাকায় ডার্বি নাকি বাতিল হল, অথচ সে দিন নিরীহ সমর্থকদের আটকাতে বাইপাস জুড়ে থাকা পুলিশবাহিনী দেখে হেসেছি এবং সর্বোপরি ‘চিরশত্রু’ ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের এক হওয়ার ঐতিহাসিক সমাবেশে শামিল হতে পেরে হেসেছি। ইচ্ছে হলে আবার হাসব।’’